ধর্মের লাশ অণুগল্প – প্রদীপ দে
সাদা কাপড়ে ঢেকে দেহটাকে নিয়ে এল বিশাল পুলিশবাহিনী, তখন ওর মা উদাস নয়নে শুধুই চেয়ে রইল। সাদা থান অপসারিত হলে তিনি অবিচল সেই বোবা দৃষ্টিতে অপলক নয়নে তার সন্তানের লাশটিই অবলেকন করতে থাকলেন। আত্মীয় পরিচিতজন ওনার মুখ থেকে অনুচ্চারিত ডাক অথবা নিঃশেষিত অশ্রু দেখে যারপরনাই অবাক ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়লো।
ছাব্বিশের তরতাজা যুবক ছাত্র পড়িয়ে ফিরতি পথে গৃহাভিমুখ হলে ধর্মীয় দাঙ্গার শিকার হয়ে উন্মুক্ত দাঙ্গাবাজদের শিকারে লাশে পরিণত হয়।
দশবছর পর ওই লাশের মা মানসিক হসপিটাল থেকে রেহাই পায়। তখন সবাই দেখেছিল তার অশ্রুসজল চোখ আর শুনেছিল তার মুখ নিঃসৃত শব্দ যা প্রশ্ন করেছিল , – আমার সন্তানের কোন ধর্ম ?
প্রশ্ন শুনে সবাই অবাক হল। আগেই হসপিটাল খোঁজ নিয়ে জেনেছিল যে যুবতী অবস্থায় ওই নারী প্রেম করেছিল এক হিন্দু ধর্মাবলম্বী যুবকের সঙ্গে। বিবাহ পাকা হয় কিন্ত ততোক্ষনে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। বিবাহের পঁনেরো দিন পুর্বেই সেই যুবকটি আকস্মিক পথদূর্ঘটনায় মারা যায়। ভীষণ বিপদে পড়ে যুবতীর পরিবার। আর তখনই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ওই মৃত যুবকের এক মুসলিম বন্ধু। বিবাহ করে সন্তানের পিতৃত্ব স্বীকার করে নেন। পালক পিতার পরিচয়ে সন্তান মাথা তুলে দাঁড়ায়।
তারপর আর ওই নারী সেই পুরোনো স্মৃতি রোমন্থন করেনি কোনদিনই শুধুমাত্র তার সন্তান আর স্বামীর মুখ চেয়ে….
ধর্মের লাশ অণুগল্প – সমাপ্তি
যে কেউ তাদের লেখা জমা দিতে চান। অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা জমা দিন পৃষ্ঠায় জমা দিন এবং যারা লেখা জমা দিচ্ছেন। পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে অনুসরণ করুন

আমি প্রদীপ দে । বয়স ৬১ । কলকাতা নিবাসী। কর্মজীবন ছিল হিসাব -কর সংক্রান্ত। লেখালেখি নেশা। নিজের চারটি বই প্রকাশিত। আরো বই লেখা আছে। বাবা শিল্পী মানুষ ছিলেন। বিবাহিত।
অন্যান্য
দমকা হাওয়ায়
চা বাগানের জালিয়াত
পথশিশু