প্রেম প্রেম প্রেমের গল্প -দীপঙ্কর বেরা
পাড়ার মহীমা। এ পাড়ার রত্নশ্রী। স্কুলের ঋতু। বাজারের ধারে সোনালী। পাশের বাড়ির নবীনা। এদের সবাইকে আমি ভালোবাসি। এরা সবাই ঘুরে ফিরে আমার স্বপ্নে আসে। আমি এদেরকে গোলাপ দিই। আই লাভ ইউ বলি। আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরি। ওরা খিলখিলিয়ে হাসে। কেন না এখন আমার ভরা যৌবন। ফাগুন মাস। বসন্ত কাল। হ্যা হ্যা করে হাসে মৌলিক। বলে – আরে ক্যালানি, এতজনকে ভালো লাগতে পারে। কিন্তু ভালোবাসা নয়। ভালোবাসা হয় শুধু একজনের সঙ্গে। একজনের সঙ্গে! পড়ার সময় বইয়ের পাতা উল্টে ভাবি কে তাহলে সেই একজন? চাঁপা? টগর? রত্নশ্রী? ঋতু? কিন্তু সবার হাসি তো বুকের মধ্যে ছুরি মারে। কপালের চুল সরিয়ে যখন আড় চোখে তাকায় তখন আমার সারা শরীরে বিদ্যুৎ খেলে যায়। কেউ গান করে, কেউ নাচে, কেউ কবিতা বলে, কেউ শুধু বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয় আর আমি তখন কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারি না। হাঁ করে দেখি। বুকের মধ্যে খুব জল তেষ্টা পায়। গলা শুকিয়ে আসে। কাছে জল থাকে। তাও হাত বাড়িয়ে জল খেতে সাহস পাই না। সারা গায়ে কেমন একটা জ্বর জ্বর ভাব আসে। তাহলে কে একজন? মলয় বলল – যার পাশে থাকতে তোর বেশি ভাল লাগে। যে তোর দিকে বেশি সময় দেবে। যার পাশে দাঁড়ালে মনে হবে চাঁদ উঠেছে। ফুল ফুটেছে। মলয় বইছে। তার সঙ্গেই তোর প্রেম। আমি রত্নশ্রীর পাশে দাঁড়াই। সোনালীর পাশে। নবীনার পাশে। কি সুন্দর মিষ্টি একটা গন্ধ গা থেকে বের হয়। আমি আচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। স্কুল থেকে ফেরার পথে ঋতু বলল – ব্যাগটা একটু ধরবি আমি আসছি। ওমা ওর গা থেকেও একই রকম আছন্ন সুন্দর গন্ধ। কি যে ভাল লাগল। ক’দিন পাশে পাশে হাঁটছি। মহীমা নবীনা টগর সবার সাথে। এই গন্ধে মাতাল মাতাল অবস্থা। চাঁদ ফুল মলয় সব আছে। প্রেম স্পেশালিস্ট শৌনভ। বলল – ওসব খুঁতখুঁত কুঁতকুঁত করে লাভ নেই। সরাসরি বল, আই লাভ ইউ। – তাহলে ভালোবাসা সরাসরি বলাবলির ব্যাপার। অনুভবের ব্যাপার নয়? রগচটা গৌতম থাপড়াতে আসে। বলে – আরে যার সাথে পাশাপাশি নানান কাজে যুক্ত। তোর প্রতি তার আগ্রহ আছে তাকে না বললে সে বুঝবে কি করে? – প্রেম কি তাহলে বোঝাবুঝির ব্যাপার? পড়াশুনা কাজকর্ম আড্ডা সবকিছুর মাঝে একলা একা হয়ে আই লাভ ইউ বলার জন্য চাঁপা টগর নবীনা ঋতুর কাছে চেষ্টা করতে করতে সময় গড়িয়ে যায়। তাও একদিন সবাই আছে। আমি যতজনকে চিনি। যতজনের সঙ্গে মিশি। তার মধ্যে সুযোগ বুঝে মহীমাকে বললাম – আই লাভ ইউ। মহীমা আমার দিকে অবাক বিস্ময়ে ফিরে তাকাল। বলল – কি বললি? আবার বল। আমি একবারে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছি। এভারেস্ট জয়ের কাছাকাছি। তাই মনের জোর এনে একটু ততলিয়ে বললাম – আ ই লাভ ই উ। আর তখন নবীনা হাসল খুব জোরে। সবাই চমকে তাকাল আমাদের দিকে। বেশ রসিয়ে রসিয়ে বলল – শোন, এই বাবুর একটা খেলনা চাই। ইনার প্রেম জ্বর পেয়েছে। সেই হাসি এখনও কানে বাজে। আমি এভারেস্ট থেকে একেবারে সমতল ছাড়িয়ে গিরিখাতের গর্তে। সেই গর্তে হাত বাড়ালো সোনাই। বলল – আমি তোমাকে প্রেম শেখাব। আমি বললাম – প্রেম কি তাহলে শেখার জিনিস? – তা না। তবে আমি তোমার সঙ্গে প্রেম করব। বলেই সোনাই বাসর রাতে আলো নিভিয়ে দিল। সেই থেকে অন্ধকারে হাঁটছি। হাঁটতে হাঁটতে ছেলে বলল মেয়ে বলল – তুমি কোন কম্মের না। তুমি ভালোবাসতেই জানো না। আমি দেখলাম কাছেই সোনাই দাঁড়িয়ে। জিজ্ঞেস করলাম – তুমি কি বলছ? সোনাই আরও গম্ভীর হয়ে গেল। যেন আমাকে চেনেই না। বলল – আমি কিছু বলছি না।
প্রেম প্রেম প্রেমের গল্প – সমাপ্ত
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
প্রেম চিরন্তন
ভালোবাসা ডট কম
রৌদ্র ছায়া