কলম পাতুরি

ভাবনা আপনার প্রকাশ করবো আমরা

Home » ভালোবাসার ব্যালকনি গল্প প্রতিযোগিতা » চিরতরে বুজে গেল শেখরের চোখ দুটো

চিরতরে বুজে গেল শেখরের চোখ দুটো

চিরতরে বুজে গেল শেখরের চোখ দুটো প্রেমের গল্প – তাপস বাবু

রিমিকে খুব ভালোবাসতাম। একেবারে মন প্রাণ ঢেলে। কিন্তু আমার পরিবার অত স্বচ্ছল নয়। পড়াশোনা করার ইচ্ছা থাকলেও পয়সার অভাবে এগোতে পারি নি। আমি ছবি আঁকতে খুব ভালোবাসতাম । একদিন রিমিকে সামনে দাঁড় করিয়ে ওর একটা ছবি এঁকেছিলাম।ও সেটা দেখে খুব খুশি হয়েছিল। রোজ বিকেলে একটা পুকুরের ঘাটে বসে ওর সাথে কত মজা করে গল্প করতাম।সেসব শুনে ও হাসত।ওর মুখের হাসি আমার খুব ভালো লাগত। তারপর একদিন ওর বাবা মা ওর বিয়ে ঠিক করলো শহুরে এক ছেলের সঙ্গে। ছেলেটি দেখতে শুনতে দারুন।বড় অফিসে চাকরি করে। আমার থেকে সব দিক দিয়ে সে উজ্জ্বল।রিমি আমার সাথে ঐ পুকুরঘাটে শেষ দেখা করল, ওর বিয়ের কথা বললো। আমি বললাম,” রিমি তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। তাহলে আমার ভালোবাসার কোন দাম নেই তোমার কাছে”।ও বললো, “না নেই। তোমার কাছে থাকলে আমি সুখী হবো না। তোমার কাছে কি আছে?না টাকা না বড় থাকার বাড়ি। তুমি আমাকে খুশি করতে পারবে না। তাই আমি তোমাকে মুক্তি দিলাম। আমাকে আর মনে রেখো না। আমি চলে গেলাম।রিমলি চলে গেল আমাকে অবহেলা করে। তারপর কেটে গেছে দুবছর।রিমলির সেই ছবিটি চোখের সামনে আজো আমার অন্য আঁকা ছবির সাথে সাজিয়ে রেখেছি । কারণ আমার শরীর খুব খারাপ। হাঁটা চলার শক্তি নেই। রক্ত বমি হচ্ছে।কাশির সাথে সাথে টাটকা রক্ত পড়ছে মুখ থেকে। আমি আর বাঁচবো না।রিমির ছবিটা শুধু সামনে সাজিয়ে রেখেছি।ওটা দেখেই মরতে চাই। হঠাৎ আমার মাথায় মেয়েলী স্পর্শ দেখি রিমি এসেছে কোলে তুলে নিয়েছে আমার মাথা ওর নিজের কোলে। মুখে আনন্দ নিয়ে বললাম,” রিমি তুমি এসেছো!এসেছ ফিরে!”ও‌ কাঁদো কাঁদো মুখে বললো,” সেদিন আমি তোমার সাথে ওভাবে কথা বলে চলে গেছি তার জন্য আমি অনুতপ্ত। আমাকে খমা করো,আসলে আমি বাবা মায়ের চাপে ওভাবে কথা বলতে বাধ্য হয়েছিলাম।” আমি হেসে বললাম,” তুমি বুঝেছ কিন্তু অনেক দেরি করে ফেলেছ। আমার যে সময় হয়ে গেছে। যাও তুমি তোমার স্বামীর কাছে। তোমার কথা মতো আমাকে তুমিও ভুলে যেও। শুধু মনে রেখো এক অভাগা চালচুলোহীন প্রেমিক তোমায় প্রকৃত ভালোবেসেছিল,তার হয়তো টাকা, বাড়ি ছিল না,ছিল মনের কোণে খাঁটি ভালোবাসা আর বিশ্বাস,সে বিশ্বাসে সে চেয়েছিল কাউকে খুশি করতে পারবে। এটাই ছিল তার আত্মবিশ্বাস। কিন্তু ভাগ্য তার সব ভেঙে দি………..খুক করে একটা কাশি।গলগল করে রক্তের প্রবাহ মুখ থেকে। চিরতরে বুজে গেল চোখ দুটো।

চিরতরে বুজে গেল শেখরের চোখ দুটো প্রেমের গল্প – সমাপ্ত

আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।

error: Content is protected !!