কলম পাতুরি

ভাবনা আপনার প্রকাশ করবো আমরা

আমার আগমনী

আমার আগমনী কবিতা -পায়েল গোস্বামী

সনাতনী শক্তিরুপা গুণময়ী মহামায়া۔۔۔

হে শাশ্বতী,তব চরণ তলে আজ ভূলুণ্ঠিত হোক আমার এই নশ্বর কায়া۔۔হে দনুজ দলনী,

আজ এই মঙ্গল প্রাতে আমরা করজোড়ে মিনতি করি, 

মাগো তুমি প্রকট হও তোমার সেই দশভূজা মূর্তি ধরি |

শৈলজা۔۔তোকে আজ জানাবো অনেক সত্য,যা কিছু হয়ে রয়েছে শুধুই ব্রাত্য |

মারে আমাদের প্রতিটি হিন্দু ঘরের তুই রাজরাণী  তবুও জানিস তো মা, এরা ভুলে গেছে কাকে বলে ব্রহ্মবাদিনী |

মহীয়সী কাকে বলে?কাকে বলে বিশ্বরূপা?ভুলতে বসেছে আজ সবাই |

আমাদের এই তাসের ঘর সম সমাজে তোর কুলশীরা আজ বড়ই অপাংক্তেয়, 

এই নারী জাতির ললাটে শুধুমাত্র বীতস্পৃহতা  বিরাজে|

মা চন্ডীকার সাজানো এই বিশ্বচরাচরে মেয়েরা প্রোথিত হচ্ছে পাষাণ গহবরে,

হে মা ভবানী,তুই প্রতীয়মান হ আরোও একবার۔۔ দেখা দে,দেখা দে রে মা |

হে হৈমন্তী,এই তথাকথিত পুরুষতান্ত্রিক সমাজকে আজ তু্ই স্মরণ করিয়ে দে,

যে পবিত্রতার বড় বড় বুলি তাদের মুখে ফুটে ওঠে সেই পবিত্র বেদের লেখিকাদের নাম 

এরা কি জানে গার্গী কে?লোপামুদ্রাকে চেনে এরা? আচ্ছা মা۔۔সত্যি করে বলতো,যে কৃষ্ণ নামে মাতোয়ারা হচ্ছে তারা,সেই হরিনামের কি কোনই মহিমা আছে তার রাধারাণী ছাড়া?

যে অনন্ত শয্যায় নিদ্রিত রয়েছেন দেব নারায়ণ,সে শয্যা কি নেহাতই কণ্টকশয্যা নয় বিনে কমললোচন?

মহাকালীর সেবক রূপে যারা তাদের নিত্য করছে অপমান,তাদের স্মরণ করিয়ে দাও۔۔সেই মহাতপার চরণতলে কে সদা বিরাজমান?

এরা কি পারবে চারধাম আর সতীপীঠের তুল্য মূল্য বিচার করতে?সে শক্তি কি আদৌ আছে তাদের?

বল না রে মা বলে দে তুই বলে দে একবার,

হে অপরাজিতা,তোমার সর্বজয়ার দল কেন আজকে শুধুই পরাজিতা ?

হে শংকরী,এই মূর্খের দলকে তুমি বলে দাও প্রকৃতির অপর নাম কি?সৃষ্টির অপর নাম কি?সর্বশেষ গঙ্গা প্রাপ্তির গঙ্গা কে ?

বল বল মা তোর অঙ্গজারা আজ কেন এত অবলা?

আজ তোর কাছে বলতে মন চায়,এই পুরুষ জাতি ভালবাসার পূজারী۔কিন্তু এরা তাজকে মানে না,

এরা ধর্মের বাণী আওড়ায় কিন্তু ভুলে যায় যোধা আকবর কে,

এরা সম্মান করে না মমতাময়ীর,সুলতানা রাজিয়ার অস্তিত্বে এরা বিশ্বাসী নয় |

শিবাঙ্গী কথার অর্থ এদের কাছে অজানা |

রামকৃষ্ণ মা সারদার বরপুত্ররা অলক্ষী বলে সম্বোধন করে,এদেশের বীরঙ্গনাদের |

এই অবিমৃষ্যকারীদের দল শুধুই অপরিণামদর্শী |

হে অমৃত জ্যোতি,হে প্রাণময়ী,তুমি আরো একবার তোমার অগ্নি লোচন প্রস্ফুটিত করে আবির্ভূতা হও, আরো একবার ধারণ করো তোমার সেই রুদ্রমূর্তি۔ ভীষণ প্রলয় তাণ্ডবে শিহরিত হয়ে উঠুক এই ক্ষিতি|

আরো একবার প্রত্যেকের মুখে তীব্রস্বরে উচ্চারিত হোক۔۔۔۔۔

নম: সৃষ্টি স্থিতি বিনাশানাং শক্তিভূতে সনাতনী,

গুনাশ্রয়ে গুনাময়ে নারায়ণী নমহস্তুতে |

মহামেঘপ্রভাং ঘোরাং মুক্তকেশীং চতুর্ভুজাং,

কালিকাং দক্ষিনাং মুণ্ডমালা বিভূষিতাং |

আমার আগমনী কবিতা – সমাপ্তি

আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।

error: Content is protected !!