কলম পাতুরি

ভাবনা আপনার প্রকাশ করবো আমরা

Home » পুজো সংখ্যা ১৪৩১ » ভূতাত্বিক বুদ্ধিজীবী

ভূতাত্বিক বুদ্ধিজীবী

ভূতাত্বিক বুদ্ধিজীবী ভৌতিক গল্প – প্রদীপ কুমার দে

আকাশ কালো। মেঘ করেছে। ঝড় আসতে পারে।

আমার মনও খারাপ। 

ভাবলাম পথে বেরিয়ে পড়ি।

সন্ধ্যের মুখে বের হলাম। বের হওয়ার মুখেই গিন্নি ঝামেলা বাঁধালো। পকেট ফাঁকা।

—  “এটা আনো ওটা আনো”

রেগেমেগে বের হলাম। বৃহস্পতিবার। এখানে এদিন দোকান সব বন্ধ থাকে। রাস্তাঘাটও অন্ধকার।

সোঁ সোঁ আওয়াজ হচ্ছে। মেইন রাস্তা ছেড়ে গলিতে ঢুকলাম। সামনে পাড়ার যুবকেরা চায়ের দোকানে চা আর সিগারেটের আড্ডায় মশগুল । গলির ভিতর ঢুকে হাঁটছি। এদিকে আবার গলির দুপাশে বড় বড় গাছ। গাছগুলো সব হাওয়ায় বেশ আওয়াজ করে পাতার শব্দ তুলছে।

একটা বড় বটগাছ থেকে ধরাস্ করে কি যেন পড়লো। আম নয়তো?

দৌড়ে যাবো?

ভাবছি …

মাথায় এল ওটা যে বটগাছ।

বটগাছে আম?

সবুজরঙা একটা লোক আমার সামনে এসে দাঁড়ালো, আমি দেখছি, সবুজাভ। এটা কোন প্রানী? উশখুশ করছি দেখে ঐ লোকটি মুখ খুললে,   যদিও গলাটা তার ধরা ছিল,  

—  আমি মানুষ নই হে বাবুসাব …

—  তাহলে কে?

—  আরে আমি হলুম গিয়ে, মানুষ নই,  ভূত আছি, ভূত!

আমি –  তুমি ভূত আছো? ইয়ার্কি মারছো? মারবো এমন না ..

ভূত —  কেন মারবে ? আমি তোমার কাছে এলুম কিছু জানতি- শিখতি, আর তুমি মারবে কইচো।

আমি —  ভূত এসেছে মানুষের কাছে? তাও জানতে?

ভূত — দ্যাখো তোমারে ব্যাপারখানা পরিস্কার কইরে বুঝায়ে বলি। আগে আমরা দলে অনেক ভারীই ছিলাম। মানে অনেক ভূতে আমরা বেশ দলবদ্ধ ছিলাম। আমদের মধ্যে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার যোদ্ধা লেখক কবি সবই মজুত ছিল। ভাল ভাল লোক বিপদে পইরেই শেষমেশ ইচ্ছেমৃত্যু  নিয়েই আমাদের দলে সরাসরি ঢুইকে যাইত। আর আমরা খুব শক্তিশালী টিম ছিলাম। মানুষগুলোরে পরোয়া করতামই না। আমরাই মানুষদের ভয় দেখাইতাম। এখন আর ভূতের ভয় পাও? ভূত মইরে মইরে শেষই হয়ে গ্যাচে যে …….

আমি বেশ চিন্তায় পড়ে গেলুম। ব্যাটারছেলে তা ঠিক বলেছে তো?

আমি — তা বটে। তা ভূত হঠাৎ করে কমে গেল কেন?

ভূত —  এতো মানুষ জন্মাচ্ছে রোজ আর মরছে যে কম তাই ভূতেদের টেনে টেনে মানুষ বানিয়ে দেচ্ছে।

আমি —  এটা অবশ্যই ঠিক বলেছো। তা এখন সমস্যাটি কি?

ভূত — আমাদের মধ্যে যে বুদ্ধিজীবী জ্ঞানী মানুষের বড় অভাব হইতাচে। আমাদের নেতৃত্ব দেবে কোন একন?

আমি —  তা বটে। তা আমার কাছে এলে কেন?

ভূত —  আপনি তো একজন বুদ্ধিজীবী, লেখেনজোকেন যদি আমাদের দলে আসেন তাহলি খুব ভাল হয় আমরা বেঁইচে মানে মইরে যাই!

আমি — আরে আমি মানুষ, সেটা কি করে সম্ভব?

ভূত —  আপনার সাহসে কুলাবে না কিন্তু রাজী হইলে আমিই ওই জগন্য কামটে সেরে ফেলাই দিতে পারি ….দেখি ব্যাটারছেলে হাতটা আমার গলার দিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে, আঙুলগুলো কি বড় বড় আর লম্বা লম্বা সব নখ …

ভূতাত্বিক বুদ্ধিজীবী ভৌতিক গল্প – সমাপ্ত

আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।

error: Content is protected !!