প্রত্যাবর্তন ভৌতিক গল্প – নিনিয়া সুকথা
চিতোর দেখে সোনেগড় পৌঁছতে পৌঁছতে প্রায় বিকেল গড়িয়ে সন্ধে হয়ে গেল ওদের, একেই তো রাস্তার সাড়ে বত্রিশ ভাজা অবস্থা আর তার ওপর এবছর এসব অঞ্চলে আবার বাড়াবাড়ি রকমের বৃষ্টি হচ্ছে।
সকাল থেকেই আকাশের মুখ কালো ঝুল, ইতিমধ্যেই বড়বড় ফোঁটায় ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়তে শুরু করে দিয়েছে, আর এই বৃষ্টিতে বাইরে বেরনো মানে, সাক্ষাৎ নিউমোনিয়া।
অগত্যা, বৃষ্টিভেজা সন্ধের অন্ধকারে,হেড লাইট জ্বেলে, গড়ের খুব কাছাকাছি একটা জায়গায় নিজেদের দুধসাদা ল্যান্ডরোভারটা পার্ক করল, শামসুল রহমান বিনতে সেলিম ওরফে স্যাম।
এখানে সে অবশ্য একলা আসেনি, সঙ্গে এসেছে বান্ধবী যোগ্যতা সিং দাহিয়া ও আর যোগ্যতা ওরফে জিগির ছোটভাই শিবাংশ।
এতরাতে, এই জঘন্য আবহাওয়ায় ওদের এই সোনেগড় ভ্রমণ অবশ্য কোনো অ্যাডভেঞ্চার করতে নয়, কারণটা নেহাতই সাদামাটা ও মামুলি, সেটা হল সম্পত্তি।
এককালে, যোগ্যতার পরিবার শাসন করত এই সমগ্র সোনেগড়, তাই হিসাবমতন এই গড়ের মালিকও তারা। আর, যোগ্যতার ইচ্ছা, এই গড়কে মেরামত করে একটা হেরিটেজ হোটেল খুলবে, তাই সোনেগড় নিজে থেকে ঘুরে দেখার জন্য সেই সুদূর মার্কিন মুলুক থেকে, ছোটভাইয়ের সঙ্গে রাজপুতানার এমন অচেনা আধচেনা প্রান্তে ছুটে এসেছে সে; আর একাজে তাদের এই দু ভাইবোনের সঙ্গী হয়েছে যোগ্যতার বয়ফ্রেন্ড কাম আর্ট রিস্টোরার স্যাম।
সোনেগড় কোনো ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন নয়, তাই ধারেকাছে কোনো হোটেল বা হোম স্টে তে রাত কাটানো দুরাশার নামান্তর, তাই ঠিক হল, একটু কষ্ট করে হলেও, আজ রাতটা,এই প্রবল বৃষ্টিতে ঘেঁষাঘেঁষি করে গাড়ির মধ্যেই কোনমতে কাটিয়ে দেবে তিনজন।
যেমন কথা, তেমনি কাজ, ভাগ্যিস বুদ্ধি করে,চিতোরগড়ের একটা হোটেল থেকে শুকনো খাবার আর প্যাকেজড জুস এনে রেখেছিল যোগ্যতা। তাই এযাত্রা রক্ষা হল,
সুদৃশ্য চটের ব্যাগ থেকে সেই কেনা খাবারগুলো বার করে ভাগ বাঁটোয়ারা শুরু হল এইবার।
হঠাৎই টক টক আওয়াজ করে, সামনের সিটের কাঁচের জানলায় কে যেন টোকা দিল বার দুই। বাইরের মুষলধার বৃষ্টির ঝমঝম আওয়াজ ছাপিয়েও সেই শব্দ পৌঁছে গেল ওদের প্রত্যেকের কানে।
যোগ্যতা বরাবরই প্রচন্ড একগুঁয়ে আর জেদি, তাই শিবাংশ কিংবা শামসুল, কারোর নিষেধ ই কানে না তুলে, একেবারে ফট করে খুলে বসল গাড়ীর বাঁদিকের দরজা, আর ঠিক তখনই, এক হাতে, লাঠি আর একহাতে হলদেটে লন্ঠনের মৃদু আলো নিয়ে, যেন অন্ধকারের বুক চিরে আত্মপ্রকাশ করল, ময়লাধরা, তেলচিটচিট পাগড়ি পরা, বুড়ো একটা লোক।
বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে শরীর, চৌগোঁপ্পা আর গালপাট্টা হয়েছে দুধের মতন সাদা, পরণে রাজপুতানি পেশোয়াজ আর পায়ে, উটের চামড়ার শুঁড়তোলা নাগরা, বৃষ্টির জলে ভিজে একেবারে সপসপে। বুড়োকে একঝলক দেখলে মনে হয়, রাজপুতানার বর্ণময় ইতিহাসের পাতা থেকে যেন সটান বর্তমানের মুখোমুখি হয়েছে সে।
হলদেটে কালো ছোট ধরা দাঁত বার করে, ঘড়ঘড়ে গলায় স
যোগ্যতার দিকে তাকিয়ে কাতরস্বরে বলল,’ হুকুম মন্নে তিস লাগি হ্যায়’, ‘পানি মিলেগো কে?’ মনটা নরম হয়ে গেল, যোগ্যতার,ব্যাগ থেকে একটা ছোট জলের বোতল বার করে, ছিপিটা সে খুলে ধরল তার সামনে, ঢক ঢক করে অনেকখানি জল খেয়ে, বোতলটা আবার তার হাতে, ফিরিয়ে দিল সে।
তারপর বলে উঠল, ‘ আপ মান্নে উপর বড়ে এহসান কি হো, অর এক কর দিজো, মান্নে শরণ লেন দো’।
যোগ্যতা কিছু বলতে যাবে, তার আগেই হাঁ হাঁ করে উঠল, শামসুল। কোথাকার কোন এক বুড়ো, এই নিশুত রাতে, ঘনঘোর বর্ষার মধ্যে এসে এসে জল চেয়ে খাচ্ছে আর শুধু কি তাই, ব্যাটা ছোটলোক! একেবারে খেতে পেলে, শুতে চায়। দামি মিনারেল ওয়াটার গিলেও শান্তি হয়নি, এইবার ফোকটে গাড়ি চড়ার ধান্দা, যত্তোসব বদমায়েশি।
পাথরের মতন শক্ত কঠোর চোখে, শামসুলের দিকে ফিরে চাইল যোগ্যতা। শিবাংশ ও বেশ কড়া, জ্বালাধরানো চাহনি নিক্ষেপ করল তার দিকে, অগত্যা,বৃষ্টির ছাঁট, সপসপে জামা জুতো, লাঠি লন্ঠন সবশুদ্ধ সমেত, বুড়ো একেবারে উড়ে এসে জুড়ে বসল, গাড়ীর ভিতর, শিবাংশের একেবারে ঠিক পাশেই।
যোগ্যতা আর শিবাংশের সঙ্গে এটা সেটা নিয়ে কথাবার্তা বলতে বলতে, কথায় কথায় ওরা জানতে পারল, বুড়ো আসলে, জাত কিসসাওয়ালা, এক চারণ।
এদিক সেদিক গল্প শুনিয়ে পেট চলে তার, বিয়ে থা করেনি, তাই বেটা বিন্দনি কিছুই নেই,চিতোরের কাছেই এক জায়গায় চারণ গান আর কিসসা শোনাতে গেছিল, আসার পথে, এই, তীব্র বৃষ্টিতে রাস্তায় ফেঁসে গেছে বেচারা।
শিবাংশ একটু আধটু লেখালেখি করে, রাজস্থানি ফোকটেইলস্ এর ওপর গবেষণা করে দু একটা বই বের হয়েছে তার, তাই হাতের কাছে এমন জলজ্যান্ত এমন একজন চারণ পেয়ে সে তো একেবারে আহ্লাদে আটখানা।
সে বুড়োকে একপ্রকার পীড়াপীড়ি করতে শুরু করল একখানা কিসসাকাহানি শোনাবার জন্যে , তবে ফোকটে নয়, অবশ্যই বুড়োর পাওনার তুলনায় বেশ বড় অঙ্কের একটা টাকার বিনিময়ে।
খামখেয়ালী ভাইয়ের এমন কান্ড দেখে যোগ্যতা তো একেবারে হেসে কুটিকুটি, হাতের কাছে চারণ পেয়ে গল্প শুনতে ইচ্ছা কারই না করবে!?
তবে, ব্যতিক্রম হল শামসুল, তার কাছে গোটা ব্যাপারটাই অন্তত বিরক্তিকর ও একঘেয়ে লাগতে লাগল, দাঁতের ওপর দাঁত পিষতে লাগল সে; ‘ অসহ্য!
একেই তো আল জিহাদ সংগঠনের ফান্ড যোগাড় করার জন্যে এই বিরক্তিকর মেয়েটার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে হচ্ছে হাইকমান্ডের নির্দেশে, আর এর সঙ্গে ফেউ হয়ে জুটেছে ওর এই টিউবলাইট ভাইটা আর তারপর এই প্যানপ্যানে বর্ষায় এই ভাঙ্গার এলাকায় এসে ফেঁসে গেছে, আর এখন এই ফালতু বুড়োর ঢপ গিলতে হবে’ । রগটা রাগে দপদপ করছে শামসুলের, তাই রগটা দু আঙুলে টিপে, নিজের বিরক্ত ভাবটা কাটাবার চেষ্টা করল সে।
কিসসা শোনাতে চারণেরা বড় ই ভালোবাসে, তাই বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করেই রাজি হল বুড়ো, তবে শিবাংশ আর যোগ্যতার শত অনুরোধে ও কোনোরকম পয়সআকড়ই নিতে বিন্দুমাত্র রাজি হল না সে।
‘ঢোলা-মারু,মুমল-মহেন্দ্র’ কোনসা শুননা চাহতে হো,হুকুম’ ? শিবাংশ কে জিজ্ঞেস করল বুড়ো। ‘ ওসব অনেক শুনেছি চরণ’সা,আজ আর ওসব নয়… তারপরেই চোখে মুখে শিশুর সারল্য আর দুষ্টুমি এনে সে আবদার করল, পারলে শোনাও দেখি ‘সোনেগড় রি কিসসো’।
কথাটা শুনে, কিরকম একটা অদ্ভুত, আবিল দৃষ্টিতে তার আর যোগ্যতার চোখের দিকে চেয়ে রইল বুড়ো, যেন বহু যুগের ওপার থেকে একখানা বড়সড় সমস্যার সহীহ সমাধান রয়েছে তাদের ভাইবোনের চোখের গভীরে।
কিছুক্ষণ পরে, একটা লম্বা চওড়া নিঃশ্বাস নিয়ে বুড়ো বলল, ‘হুকুম, যো আজ সচ ওহি বাদমে পরীকথা হোওয়ে’।
আজ মান্নে, আপ সবনে এক খরি পরীকথা শুনানো হ্যায়, সোনেগড় রি সচ্চি পরীকথা। তারপর, শ্রীগনেশ ও মাতা সরস্বতীর বন্দনাগান করে, সে শুরু করল, নিজের কিসসা।
আজকের মতন চিরটাকাল এমনি ভাঙাচোরা ছিল না সোনেগড়। আজ থেকে মাত্র পাঁচশত বছর আগেই সগর্বে মাথা তুলে, কালভুজঙ্গিনীর মতন দাঁড়িয়ে থাকত, শক্ত কালো পাথুরে দুর্গ সোনেগড়, সূর্যবংশী দাহিয়া রাজাদের আন,বান,শান।
পুরুষানুক্রমে,তখন এই দুর্গ ও সোনেগড়ের সিংহাসনে উভয় আলো করে বসেছিলেন
মহারাজা রাও হরহরি সিং দাহিয়া। হাতিশালে হাতি,ঘোড়াশালে টগবগে ঘোড়া, মাঠে শষ্য আর সমগ্র রাজ্যে শান্তি। সুখে আর আনন্দে অতিবাহিত হতে এই জনপদের প্রত্যেকটি দিন রাত।
কিন্তু সুখের আয়ু বোধহয় খুব কম হয়, আর তাইতো সোনেগড়ের ওপর নেমে এসেছিল এক ভয়াবহ বিপর্যয়, আর তাতেই…
একটানা কথা বলতে বলতে হাঁপিয়ে পড়েছিল বুড়ো চারণ,বড়বড় শ্বাস টানছিল সে, পুরনো হাপরের মতন ওঠানামা করছিল তার বুক, সঙ্গে সঙ্গে তার দিকে মমতাভরে,জলের বোতলটা এগিয়ে দিল শিবাংশ, ঢক ঢক করে অনেকটা জল খেয়ে, থেমে থাকা গল্পটা আবারো শুরু করল, বুড়ো।
রাও হরিহর গোটা রাজপুতানায় হররাই নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন।আর দুটো জিনিষের জন্যেই গোটা রাজপুতানায় জয়জয়কার ছিল তাঁর। এক তাঁর চিতোরের সিংহাসনের প্রতি প্রশ্নহীন আনুগত্য ও অসামান্য বীরত্ব। আর দ্বিতীয়টি তাঁর রাণীরা।
ছয় মহিষী ছিল হর রাইরের। গৌরা বাঈসা, মুক্তা বাঈসা,মাণিক্যা বাঈসা,গিরিজা বাঈসা, শামপিয়ারী বাঈসা আর সবচাইতে বয়সে ছোট বছর দশ বারোর চন্দ্রাবতী ওরফে চান্দবাঈসা।
অসামান্য রূপের সঙ্গে গুণের মেলবন্ধন ঘটেছিল তাঁর রাণীদের মধ্যে। হর রাই আর তাঁর এই ছয় রানী, যেন ছিলেন, এক দেহ আর ছয় ইন্দ্রিয়। বড়, গৌরা ছিলেন, হররাইয়ের ,প্রায় পিঠোপিঠি মামাতো বোন, রাজদরবার হর রাই সামলালে, রাণীমহলের একচ্ছত্র অধিপতি ছিলেন বড়রাণী, রাজ্য সামলানো থেকে যুদ্ধনীতি, বহুক্ষেত্রেই মহারাজের ডানহাত ছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাণী, মুক্তা আর মাণিক্যা ছিলেন যমজ বোন, রাজমহলের হেঁসেল সামলানো ছাড়াও রাজার স ওয়ার,হাতিশালা ও আস্তাবলের দেখাশোনা ও দ ওবা দারুর দায়িত্বে ছিলেন ওঁরা দুজন।
আর মহারাণী গৌরা মহারাজের ডানহাত হলে,গিরিজা রাণী ছিলেন বামহাত, তাঁকে সোনেগড়ের চর ও দূতেদের সর্দারণী বললে বোধহয় ঠিক বলা হত, ছদ্মবেশ নিতে ওস্তাদ এই মহারাণীর জিম্মায় ছিল রাজ্যের গুপ্তচরবিভাগ। ছোট রাণী চন্দ্রাবতী তো ছিলেন, নিতান্তই বালিকা, পুতুল খেলা, ময়ূরকে দানা খাওয়ানো আর পাখোয়াজ বাজিয়ে কাটতো তার সময়…
‘আর,রাণী শামপিয়ারী বাঈ!? তিনি?’ শিবাংশের প্রশ্নের উত্তরে স্মিত হেসে,চারণ জবাব দিল; শামপিয়ারী ছিলেন সবার চাইতে আলাদা, তাঁর পিতৃদত্ত অন্য কিছু একখানা নাম ছিল। কিন্তু তাঁর অসীম কৃষ্ণভক্তি ও প্রবল সাংসারিক বৈরাগ্যের কারণে, তাঁর নাম পাল্টে হয়ে গেছিল শামপিয়ারী।
বাপের ঘর থেকে অন্যান্য সব কিছু, হীরে জহরত, হাতি ঘোড়া, গোধনের সঙ্গে সঙ্গে তিনি এনেছিলেন দুখানা আশ্চর্য জিনিষ! তারমধ্যে একটি ছিল প্রায় বারো তোলা রূপার শ্রীকৃষ্ণ ভগবানের নয়নশোভন বিগ্রহ, যার সারা গায়ে, রত্নখচিত, বহুমূল্য অলঙ্কার পরানো ছিল, আর দ্বিতীয়টি ছিল, ওই বিগ্রহের প্রায় সম ওজনের, হাতের মণিবন্ধ থেকে কনুই পর্যন্ত একজোড়া খাঁটি সোনার ঢাল চূড়া।
এত ভারি গয়না, মহারাণী সারাক্ষণ হাতে পরিধান করতেন কিভাবে, সেটা যথেষ্ট বিস্ময়ের। এতটাই ছিল তার ভার,যে সেই চূড়লার একটি আঘাত,নিমেষে হতচেতন করে ফেলতে পারত একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষ মানুষকে।
প্রায় সারাক্ষণ, রাণীমহলের মণিমন্ডপে, নিজের ইষ্টের পুজোয় ব্যস্ত থাকতেন তিনি। পুজো, ভজন কীর্তন আর দানধ্যানে সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখতেন নিজেকে।
ততদিনে,চিতোরের পতন ঘটেছে, মেবারের রাজধানী সরে গেছে উদয়পুরে। মহারাণা প্রতাপ তখন পরিকল্পনা করছেন হলদিঘাটি যুদ্ধের, ডাক পড়ল হর রাইয়ের। প্রকৃত রাজপুত, যুদ্ধে মরতে ভয় পায় না। সোনেগড়ের মহারাজা ও পেতেন না। তাঁর একাদশ রাজপুত্রের মধ্যে দুইজন, লক্ষ্মণ ও বীরসেন কে সঙ্গে নিয়ে, নিজের সৈন্যসামন্তের সঙ্গে, নাঙ্গা তলোয়ার হাতে, হরহর মহাদেব,জয় মা ভবানীর রণঘোষ তুলে, হলদিঘাটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা
হলেন তিনি। আর,রাজপুত্রদের সুরক্ষার চিন্তা করে, যুবরাজ রঘুরাই সহ বাকী রাজপুত্রদের বিভিন্ন সুরক্ষিত স্থানে, আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হল।
এদিকে,হলদিঘাটির হলদে, সোনারঙা মাটিতে বীরের মতন লড়াই করতে করতে বীরগতি পেলেন হররাই ও তাঁর দুই আত্মজ। চারিদিকে দাবানলের মতন ছড়িয়ে পড়ল এই খবর।
মহারাণী গিরিজার প্রশিক্ষিত গুপ্তচরেরা সঠিক সময়েই গুপ্ত সুড়ঙ্গ দিয়ে দুর্গে পৌঁছে দিয়েছিল এই নিদারুণ দুঃসহ সংবাদ। শুধু কি তাই! মহারাণী গিরিজার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল আরো একটা ভয়াবহ গুপ্তবার্তায়, সোনেগড় অরক্ষিত!
এই সুযোগে, হররাইয়ের মহারাণীদের দিল্লীর হারেমে পুরতে আর রাজ্যের বিষয় সম্পত্তি লুটতরাজ করতে ধেয়ে আসছে আসমত খান জাহান্দরির নেতৃত্বে মুঘল সেনার একটা টুকরি।
খবরটা পেয়েই, বড়রাণী গৌরাকে জানালেন গিরিজা। শোকে মূহ্যমান হলেও বড় মহারাণী কিন্তু সাহস আর বুদ্ধি, দুঃখের কাছে বন্ধক দেননি। তাই ঝরোখার অন্তরালে থেকে দরবার বসালেন তিনি।
প্রজাদের খুলে জানালেন সব। রাজা ও প্রজা একস্বরে শপথ করল, মুঘলের হাতে নিজের অর্জিত সম্পদ অর্পণ না করা করার। তাই, সাধের ফসলে আগুন লাগালো কৃষক।
কামার, হাপর ছেড়ে হাতে নিল তলোয়ার। আর নারীরা, শিশু থেকে বৃদ্ধা, সবাই সিদ্ধান্ত নিলেন, তাঁরা জহরব্রত পালন করবেন তাঁদের আদরের রাণীমাদের সঙ্গে।
মুক্তা ও মাণিক্যা রাণী স্থির করলেন, হাতিশালা ও আস্তাবলে, যেকটা হাতিঘোড়া আছে, সব ছেড়ে রাখা হবে, যাতে মুঘল সৈন্য কিছুটা বাধা পায়, ততক্ষণে দুর্গ থেকে কিছুটা দূরের জহরস্থলীতে যাবার সময় পাওয়া যাবে।
পুরুষ প্রজাদের একাংশ রয়ে গেল সোনেগড়ে, মুঘল সেনাদের বাধা দেবার জন্য। বাকীরা আত্মগোপন করল রাজ্যের পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি জঙ্গলে।
মহারাজের চার রাণী নিজেদের সাজালেন নববধূর সাজে আর তারপর ছোট্ট চান্দবাঈসাকে নিজের হাতে সাজিয়ে দিলেন গৌরাবাঈসা।
শুধু সাজলেন না শামপিয়ারী। কারণ তাঁর কাঁধে বড়রাণী তুলে দিয়েছিলেন অন্য এক গুরুদায়িত্ব। দুর্গের কুঞ্জিকা আর মণিমন্ডপের দায়িত্ব। যাতে দুর্গের আরাধ্য আর ,সিংহদ্বারে ঢোকার পথ বন্ধ থাকে মুঘলদের কাছে।তারপর, সোনেগড়বাসীকে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে, জহরস্থলীতে যাবার রাজকীয় দোলায় চাপলেন রাজ্যের পাঁচ রাজ্যলক্ষ্মী। একে অপরকে গুয়া পান খাইয়ে ও মিষ্টিমুখ করিয়ে, চোখে আগুন ও মনে অসীম আনন্দ নিয়ে সেদিন সোনেগড়ের পূত জহরস্থলীতে স্বাহা হয়ে গেছিল সোনার পঞ্চপ্রতিমা।
‘ আর শামপিয়ারী!?’ আর ধৈর্য্য ধরে রাখতে পারলনা যোগ্যতা। মৃদু হেসে চারণ বলল,তাঁর কাজ তখনও শেষ হয়নি যে। নিজের সপত্নীদের শেষ বিদায় দিয়ে, পড়ন্ত বিকেলে, আয়নার সামনে এসে দাঁড়াল সে।
আর তারপর, মহার্ঘ্য সোনা রূপার জরির কাজ করা ঘাগর- চোলি আর চুনর ছেড়ে, অঙ্গে ধারণ করল কাষায় বস্ত্রের ঘাগর চোলি আর মাথায় দিল আর অস্বচ্ছ কুয়াশারঙা ওড়নি।
খুলে ফেলল গলায় পরা হীরের তক্তি, মুক্তার লড়ি, মুগার কন্ঠহার আর পান্নার লহরা। কান থেকে খুলল বৈদুর্য্যমণির কানফুল। পা থেকে ঝাঁঝর আর পায়েল। শুধু অঙ্গে রয়ে গেল, তুলসীর মালা আর দুহাতে রয়ে গেল সেই ভারি সোনার একজোড়া চূড়লা।
তারপর ধীর পায়ে মনিমন্ডপে গিয়ে তাঁর শামরাইকে শেষপ্রণাম করে, বিগ্রহকে কোলে তুলে নিয়ে বাইরে চলে এলেন, আর তাঁর পিছনে পিছনে চললেন, মহারাণীর বাপের ঘর থেকে আসা বেদপাঠী নৈষ্ঠিক ব্রহ্মচারী বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ পন্ডিত রমাদাস গোঁসাঞী, যাঁকে আদর করে মহারাণী দাদোসা বলে ডাকতেন।
এঁর হাতেই শিশুকালে তাঁর ঈশ্বরভক্তির প্রারম্ভ হয়েছিল, পরবর্তীকালে ইনিই হয়ে উঠেছিলেন তাঁর দীক্ষগুরু। বিবাহের পরে, শিষ্যার অনুরোধে, সোনেগড়ে আসেন তিনি।
বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ ইতিমধ্যেই দুর্গের সিংহদ্বার বন্ধ করে তালা দিয়ে এসেছেন, এখন সেই কুঞ্জিকা, পরম মমতায়, আঁচলে বেঁধে দিলেন মহারাণীর। তারপর এক পা,এক পা করে তাঁরা পৌঁছে গেলেন ঋজুলা কুন্ডের দিকে।
কুন্ডের পাশের দেওয়ালে একটা লোহার পাটন আছে, সেটাতে চাপ দিলেই, কুন্ডের জল নেমে যায় অতলান্ত গভীরে, আর বেড়িয়ে আসে ধাপকাটা সিঁড়ি, তারপর এই সিঁড়ি বেয়ে নীচে পৌঁছে, শামরায়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দুই ভক্ত পৌঁছে যাবেন বৈতরণীর অপর পাড়ে, সেইমত স্থির হয়েছিল।
মহারাণী পরিকল্পনা অনুযায়ী পাটনে চাপ দিলেন, সিঁড়িও বেরোল; কিন্তু হায় বিধি! মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক! বলে একখানা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলল বুড়ো।
‘ এই রাস্কেল, এত ভাঁড়ামো না মেরে, বাকিটা বকে, এখান থেকে ফোট! জঙ্গলি ভিখারী কোথাকার ‘ বলে, চারণের দিকে তাকিয়ে কটুক্তি করল, শামসুল।
শিবাংশ উত্তেজিত হয়ে,সবে তাকে কিছু একটা বলতে যাবে; হাত তুলে তাকে নিষেধ করল চারণ। তারপর, গল্প আবারো এগিয়ে চলল তার নিজস্ব গতিতে।
…আমাদের দেশে কুলাঙ্গার বিশ্বাসঘাতকদের কমতি কোনোকালেই ছিল না। তেমনি কোনো এক আহাম্মক কয়েকটা নিস্প্রাণ সোনার টুকরোর লোভে, জাহান্দরি আর তার নেতৃত্বাধীন মুঘল সৈন্যদের দেখিয়ে দিয়েছিল সোনেগড়ে ঢোকার গুপ্ত রাস্তা।
সোনেগড়ের কেল্লা অবধি পৌঁছতে যথেষ্ট পরিমাণ কাঠ ও খড় পোড়াতে হয়েছে, তাই খ্যাপা ষাঁড়ের মতন এতক্ষণ ধরে রমণী ও রত্ন খুঁজে তারা ক্লান্ত। রমাদাস পন্ডিতের মশালের আলো দেখেই তারা জড়ো হয়েছে কুন্ডের আশেপাশে। মহারাণীকে দেখে মুখে একটা নোংরা চুকচুক শব্দ করল জাহান্দরি।
সরেস দেখতে মালটাকে, হাতে আবার এত মোটা সোনার গয়না, তার সঙ্গে আবার এত দামী একটা বুত্। তার তো আজকে কিসমত খুলে গেছে!
তবে মালটাকে মরতে দেওয়া চলবে না, এই রাজপুতি কাফের আওরৎগুলো পাকা হারামী, নিজেরা মরতে ভয় পায় না, আর মরলেও শরীর নষ্ট করে দেয়, তাই সাতপাঁচ ভেবে, মহারাণীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে গেল সে।
বেগতিক দেখে, নিজের শিষ্যার সম্ভ্রম রক্ষার্থে, জাহান্দরির বর্মে জ্বলন্ত মশাল নিয়ে আঘাত করলেন বৃদ্ধ গুরুদেব। পিছু হটতে বাধ্য হল জাহান্দরি; আর তারপর সেনাপতিকে আঘাতের প্রতিশোধ হিসেবে, এককোপে বৃদ্ধ ব্রাহ্মণের শিরোচ্ছেদ করল মুঘল সৈন্য।
মৃত গুরুদেবের পদপ্রান্তে এসে বসলেন মহারাণী। অতর্কিতে, তাঁর মাথা থেকে খসে পড়ে গেল তাঁর ওড়নি। ঘোমটার আড়াল থেকে বেরিয়ে এল তাঁর মেঘবরণ চাঁচর কেশ।
মহারাণীকে পাবার সুতীব্র লালসায়, তাঁর সেই এলো কেশের গুচ্ছ ধরে টান মারল জাহান্দরি। সদাশান্ত মহারাণীর কালো ভ্রমর চোখদুটিতে ধিকি ধিকি জ্বলে উঠল ক্রোধের আগুনে, বসা অবস্থাতেই, সপাটে তার দিকে ঘুরে, হাতের চূড়লা দিয়ে, জাহান্দরির শিরোস্ত্রাণে আঘাত করে তাকে জখমি করে দিলেন মহারাণী।
তারপর এক ঝটকায় এসে দাঁড়ালেন কুন্ডের একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে, তাঁর ইষ্ট,গুরু ও
কুলের নামে শপথ করে, জাহান্দরি ও তার বংশকে, এই বলে অভিশাপ দিলেন যে,
রোগে,দুঃখে শোকে তাপে জাহান্দরির বংশ ক্ষয় পাবে,তার বংশে জন্মানো কন্যাসন্তানেরা ক্ষীণজীবী ও দুর্ভাগ্যগ্রস্ত হবে। আর তার লালসার বস্তু তাঁর শরীর ও এই শ্রীবিগ্রহের প্রত্যাবর্তন তিনি জাহান্দরির শেষতম বংশধরকে হত্যা করে , তবেই ঘটাবেন।
এই শেষ বাক্য উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গেই মহারাণী শামপিয়ারী ঝাঁপ দিলেন ঋজুলা কুন্ডের,অতল কালো জলে।
আর আজ অবধি না তাঁর নশ্বর দেহ ও আর না সেই শ্রীবিগ্রহ খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি, কাউকেই।
তারপর, একটা অদ্ভুতরকম রহস্যময় হাসি হেসে বুড়ো তাদের দিকে চেয়ে বলল; ‘সেদিনটা ছিল এরকম ই এক ঘোর বর্ষার সময়’।এখানের লোকে বলে, গুরু-চেলি আজো নাকি প্রতিবছর বর্ষায় ফাঁদ পেতে অপেক্ষা করে থাকে, জাহান্দরির সেই শেষতম পুরুষ বংশধরকে খুঁজে বার করার পর
চিরতরে শেষ করে তাদের শপথ পূর্ণ করার জন্য
এতক্ষণ, প্রায় মন্ত্রমুগ্ধ হয়েই গল্পে বুঁদ হয়েছিল তারা সবাই। খেয়ালই করেনি, কখন রাত কেটে ভোরের আলো ফুটেছে পুব আকাশে।
ভোরের আলো ভালোভাবে ফোটাবার আগেই সেই চারণও বিদায় নিল ওদের কাছ থেকে; যোগ্যতা ও শিবাংশের শত অনুরোধেও তিনি আর থাকতে রাজি হলেন না,বৃদ্ধ।যেমন হঠাৎ এসেছিলেন, ঠিক তেমনি ভাবে, হঠাৎই বিদায় নিলেন।
আজকে আকাশ পরিস্কার থাকায়, দুচারটে স্থানীয় ঝুপড়ি মতন দোকানটোকান খুলেছে। আর সেখান থেকেই গরমাগরম পুরী সবজি খেয়ে, প্রধানের সঙ্গে কথাবার্তা বলে, তার বাড়িতেই স্নানটান সেরে পরিস্কার জামাকাপড় পরে, গাড়ি নিয়ে দুপুর দুপুর সিধে সোনেগড় দুর্গে পৌঁছে গেল ওরা তিনজন।
কাল রাতে বলা বুড়োর বর্ণনার সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলে যেত দুর্গের বাস্তবিক রূপ; যদি না, কালের প্রভাবে আর যত্নের অভাবে এমন দৈন্যদশা হত তার। আসবার পথে এই এলাকার গ্রামপ্রধানের মুখে তারা শুনে এসেছে,
হররাইয়ের একজন রাণীকেও হাতাতে না পেরে, বারংবার কামান দেগে, নিস্ফল ক্রোধে
মণিমন্ডপ সহ দুর্গের বিভিন্ন অংশ প্রায় ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল জাহান্দরি।
সেই গোলাগুলির চিহ্ন প্রায় সারা দুর্গ জুড়ে দগদগে ক্ষতের মতন সদাজাগ্রত হয়ে আছে। যোগ্যতা ও শিবাংশ, এখানে এসে থেকেই কেমন ঘোরলাগা ভূতগ্রস্তের মতন এধার ওধার ঘুরছে।
ওদিকে শামসুলের লক্ষ্য কিন্তু অন্য।
চিতোর থেকে বেরনোর সময়, তার দলের,জঙ্গি কমান্ডার মাসুদ রানার একটা জরুরী মেইল এসেছিল তার ইনবক্সে, তালেগোলে আর চেক করা হয়নি। দুর্গটা একটু উঁচু জায়গায়, যদি ইধার ওধার ঘুরলে একটু টাওয়ার পাওয়া যায়।
টাওয়ারের চক্করে যোগ্যতা আর শিবাংশের থেকে সে যে কখন আলাদা হয়ে গেছে বুঝতেই পারেনি শামসুল। যখন খেয়াল হল, তখন অনেকটা দেরী হয়ে গেছে। দুর্গের এই অংশটা অসম্ভব নিঃস্তব্ধ। এসে থেকেই এখানে পায়রার বাসা দেখেছে সে, এখানে সেসব ও নেই।
খানিকটা সামনে এগিয়ে প্রমাণ আকারের একখানা কুয়ো দেখতে পেল সে, জলটা বেশ ঘোলাটে, ওই পুরনো কুয়োটুয়োগুলোর যেমন হয় আর কি, কুয়োর জলটা কিন্তু অদ্ভুত! চারিদিকে হাওয়া ব হলেও কেমন যেন,আশ্চর্য রকমের স্থির! আশেপাশের বাতাস তার জলে সৃষ্টি করতে পারছে না কোনো তরঙ্গ।
হঠাৎই ঘোলাটে জলে, কিছু একটা নড়াচড়া করতে দেখল সে; আজব তো! খানিকক্ষণ আগেও কিছুই ছিল না, সাপটাপ নাকি, কুয়োতে হাল্কা ঝুঁকে পকেট থেকে মিনি টর্চটা বের করে ওই বস্তুটার ওপর আলো মারতেই যেন আরো চঞ্চল আরো চপল হয়ে উঠল সেটা, আর তারপরেই বিদ্যুৎগতিতে কুয়ো থেকে বেরিয়ে উঠে, সাপের মতন শামসুলের গলায় পেঁচিয়ে গেল, তারের মতন শক্ত অথচ রেশমের মতন নরম একগোছা কালো ঘনকালো চুল!আর তারপর এক হ্যাঁচকায় , তার গোটা শরীরটাকে হিঁচড়ে টেনে এনে, সটান ফেলে দিল কুয়োর ভিতর, সাঁতার কাটতে শেখেনি শামসুল।
তাই দ্রুতগতিতে কুয়োর কালো জলে,তলিয়ে যেতে যেতে সবিস্ময়ে সে দেখল, কুয়োর ওপরে ঝুঁকে পড়ে, নিবিষ্টমনে তাকে ডুবে যেতে দেখছে কালকের সেই বুড়ো চারণ , যার গলায় একটা স্পষ্ট কাটা দাগ, চপার বা তলোয়ার দিয়ে এককোপে গলা কাটলে যেমন দাগ হয় ঠিক তেমনি।
আর ঠিক সেইসময় একটা ঝুপঝাপ শব্দ শুনে,এক দৌড়ে ঋজুলা কুন্ডের কাছে পৌঁছে দাহিয়া রাজবংশের বর্তমান দুই প্রজন্ম, তখন চোখ বড়বড় করে, সবিস্ময়ে চেয়ে দেখছে, জলটল সরিয়ে কুয়োর মুখে উঠে এসেছে, কষ্টিপাথরের এক আবলুসকালো পাটাতন।
আর তার ঠিক মাঝখানে যেন পদ্মাসনে বসে রয়েছেন গেরুয়া রঙের ঘাগর চোলি পরা এক গৌরাঙ্গী সিক্তবসনা রূপসী, যাঁর পদ্মপলাশের মতো দুইচোখ যেন মুদে রয়েছে এক অপরূপ দিব্য আবেশে,
ইনিই সেই রূপবতী রাজপুতানি, হররাইয়ের সেই পঞ্চমা মহিষী।গত পাঁচশত বছর ধরে যাঁর বাম অঙ্কে শোভা পাচ্ছে বারো তোলা রুপো দিয়ে নির্মিত মণিরত্নখচিত অলঙ্কার পরিহিত,অপরূপ শোভাসম্পন্ন মণিমনোহর শ্রীবিগ্রহ , দুহাতে ঝকঝক করছে বিগ্রহের প্রায় সমান ওজনের সোনার চূড়লা।
আর তাঁর আঁচলে,আজো শক্তগিঁঠে বাঁধা পড়ে আছে,সোনেগড় রাজপরিবারের অচলগড় কেল্লার সিংহতোরণের লোহার কুঞ্জিকা।
প্রত্যাবর্তন ভৌতিক গল্প – সমাপ্ত
আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।
অন্যান্য
রাজবাড়ী রহস্য
প্রচ্ছদ
কায়দায় জীয়ন কায়দায় মরণ