কলম পাতুরি

ভাবনা আপনার প্রকাশ করবো আমরা

নবদুর্গোৎসব

নবদুর্গোৎসব ছোট গল্প – অঞ্জলি দে নন্দী

১০ বছর বিবাহিতা নিঃসন্তান প্রার্থনা করেন –  ‘মা দুগ্গা! আমার পতি প্রতি বছর তোমাকে  গ্রামের বারোয়ারী পূজোয় পূজো করেন, তুমি ওনাকে সন্তান দাও মা! 

   পরের বছর তাঁদের যমজ মেয়ে হল। প্রথমজন স্বাভাবিক ও অন্যজন হিজড়া। গ্রামের সবার সহায়তায় ওরা মাবাবার কাছেই একসাথে রইল। বড়টি সংস্কৃতের অধ্যাপক হল ও ছোটটি মায়ের জোরে, বাবার কাছে পূজো করা শিখল। এবার মা গ্রামবাসীদের জিজ্ঞাসা করলেন, ” আমার  ছোটমেয়ে এবছর  যদি বারোয়ারী দুগ্গা পূজো করে, তোমরা মত দেবে? ” গ্রামের সবাই রাজি হলেও কিছু বৃদ্ধ ব্রাম্ভন পুরুষ আপত্তি করলেন। মেয়েটি তাঁদের মত করালো। ব্রাম্ভন, হিজড়া, মেয়ে গ্রামে নব ইতিহাস করল।

সে যখন বৃদ্ধা হল তখন পূজোর সময় যে ঢাকি ডাক বাজাত, তার মেয়েকে বলল, ” আমি তোকে পূজো করা শেখাব। তুই পরে আমার মত পূজো করবি।” ওর ঢাকি বাবা ও মেথরানী মাকে ( লোকেদের মলমূত্র করার কোমোট ইত্যাদি সাফ করত- টাকা উপার্জন করত, এভাবেই ) বলে কয়ে সে মেয়েটিকে নিজের কাছে রেখে শেখাল। আর নিজে একটি আশ্রম বানালো। এখানে হিজড়ারা এসে থাকে।  তারা লেখাপড়া করে। বই লেখে। আঁকা, খেলা, দর্জির কাজ করে। বিক্রী করে, রোজগার করে। 

     দেখতে দেখতে দেখতে ঢাকির মেয়ে পূজোর উপযোগী হল। সে এবার গ্রামের অনেককে ডেকে মিটিং করে, রাজি করাল। তখন স্থির হল যে ঢাকির মেয়ে পরের বছর থেকে মা দুর্গার পূজো করবে। আর ওর বাবা আগের মতোই ঢাক বাজাবে।

    তাই হল। আর ও ওই আশ্রমে রইল। মৃত্যুর আগে ও ওর সব অঙ্গ দান করল। বহু হিজড়া ঐ আশ্রমে এসে বাস করল। তারা সবাই শিক্ষা পেলো। কেউ বড় হয়ে ব্যবসা করল। কেউ বা চাকরী করল। তবে তারা সবাই সন্ন্যাস নিয়ে, ত্যাগের পোশাক ( গৈরিক বর্ণের ) পরে থাকতো। আর সকলেই মৃত্যুর পর তাদের অঙ্গ দান করবে, এরকম ব্যবস্থা করে রাখত। একজন তো বড় হয়ে শিক্ষা মন্ত্রীও হল। 

নবদুর্গোৎসব ছোট গল্প – সমাপ্তি

আপনাদের লেখা আমাদের ওয়েব সাইটে জমা দিতে গেলে, অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা-জমা-দিন মেনু-তে ক্লিক করুন ও নিজেকে Author হিসেবে Register করুন এবং আমাদের পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করুন।

error: Content is protected !!