কলম পাতুরি

ভাবনা আপনার প্রকাশ করবো আমরা

ছদ্মনাম

ছদ্মনাম ছোটগল্প – গৌরব কর্মকার

কিঞ্চিৎ অবহেলিত হয়েছি কখনও কখনও, বাড়িতে বানানো বাগানে গোলাপ ফোটার আশায় কিংবা মালতিপুরের জলাশয়ে নববধূর মতো দুধে আলতা পদ্ম ফুল ফোটা অবস্থায় না দেখতে পেয়ে, অবহেলিত হয়েছি বটে তবে এই অবহেলাতেও যেনো একটা সুপ্ত আশাও রয়েছে, হবে ঠিক হবে।

আমি যাকে ছদ্মনামে ডেকে বেরাই সে আসলে তার ছদ্মনামটা জানেইনি কখনও, কি করে জানবে? আমি তো তাকে বলিনি সে কথা, আমার প্রেম নিবেদন কিছুটা ধীরগতি সম্পন্ন গেড়ির মতো, আঘাতের ভয়ে খোলসের তলে লুকিয়ে পরে, তাই ফুল জানতেই পারে না যে তার ফোটার আশায় কতটা সময় ধরে অপেক্ষা করে আছি আমি। যদিও বা দীর্ঘ সময় পর সে ফুটেও যায় তবু আমার মনের ভিতরের যে বাঁধ ভাঙা আনন্দ সে আনন্দ বাইরে ঠিক ঠাঁই পায়না, তাই অগত্যা ‘বেশ বেশ’ বলেই চালিয়ে নিতে হয়। পলাশ ফুলের কথা মনে আছে? ও সাধারণত বসন্তেরই ফুল, তবে সেদিন যাদবপুরে শীতের দুপুরে গাছে ফুটে থাকতে দেখেছি। কি আভিজাত্য যেনো ওঁর গায়ে লেগে আছে! আকাশের দিকে চেয়ে চেয়ে যেনো বলছে ‘আমি পলাশ ফুল, রবির আলোর মতো রাঙা আমার দেহ, আমি চাইলেই অসময়ে জন্ম নেবো আমার বৃক্ষের নাগালে’। আমাকে হয়তো সেদিন ওঁ দেখতেও পায়নি আমি ওঁর কাছ থেকেই দূরে হেঁটে চলে গেছি। আমাদের বাড়ির পেছনে ছোট্টো উঠনটায় শিউলি গাছ ছিল, ওঁ তো শরতের ফুল, তবে শীত আর গ্রীষ্মেও উঠনটাতে দু একটা ফুল পড়ে থাকতে দেখেছি, ওঁরা সৃষ্টি ছাড়া আনন্দের জাদুকরী। মনে শান্তনা দেয় তবে অজান্তেই অবহেলা করে বারংবার, আমিও প্রেমিকের প্রজাতি, হাল আমি ছাড়বো না, অপেক্ষা করবো কিন্তু জোড় করে জন্ম নিতে বলবো না, একদিন দেখবো একটি ফুল আমার জন্যই ফুটবে, সেদিন খোলসের আড়াল থেকে বেড়িয়ে এসে বলবো “আমি তোর অপেক্ষা করেছিলাম বিনি”….

ছদ্মনাম ছোটগল্প – সমাপ্তি

যে কেউ তাদের লেখা জমা দিতে চান। অনুগ্রহ করে আমাদের লেখা জমা দিন পৃষ্ঠায় জমা দিন এবং যারা লেখা জমা দিচ্ছেন। পরবর্তী আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে অনুসরণ করুন।

error: Content is protected !!